উপাচার্য অপসারণ দাবি আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন কুয়েটের ৩২ ছাত্র
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩২ জন শিক্ষার্থী। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা থেকে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্তও চলমান রয়েছে।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় তোষক পেতে কেউ বসে, কেউ শুয়ে অনশনে অংশ নিচ্ছেন। পাশে রাখা হয়েছে কয়েকটি স্ট্যান্ড ফ্যান। তারা রাতভর কিছু খাননি বলে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সেন্টারের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এটিএম আজহারের আপিল শুনানি আজ
অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাহাত, তৌফিক, গালিব, মহিবুজ্জামান উপল ও ওবায়দুল্লাহ জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা। প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন তারা। এক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘৩২ জন শিক্ষার্থীর জীবনের চেয়ে কি উপাচার্যের চেয়ার বড়?’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় কুয়েট প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি, হামলাকারীদের আড়াল করে ‘অজ্ঞাত’ পরিচয়ের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়সারা মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
তারা আরও বলেন, একই সময়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একজন বহিরাগত মামলা করলেও প্রশাসন সে বিষয়েও কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে, যাদের মধ্যে অনেক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছেন। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৩ এপ্রিল হল খুলে দেওয়ার দাবিতে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিলেন। প্রশাসন সাড়া না দেওয়ায় ২ রাত তারা খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন। তবে তারপরও হলে পানি, খাবার বা ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, ফলে তারা অনশন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এ বিষয়ে কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, ‘আমরা দুইবার শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। আবারও গিয়ে তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করব।’
শিক্ষার্থীদের এই অনশন কর্মসূচি ঘিরে ক্যাম্পাসে উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।